পুঁজিবাজারে অস্থিরতার পেছনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও প্লেয়ারদের ভূমিকা আছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ। বিনিয়োগকারীদের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনারা বেশি মুনাফার উদ্দেশ্যে জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনছেন, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। আবার শেয়ারের দাম কমে গেলে আন্দোলন করেন। আমি কখনোই এর পক্ষে নই।
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ব্যাংকিং অ্যালমানাকের ৬ষ্ঠ সংস্করণের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। একই অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অর্থনীতিতে এ মুহূর্তে পাঁচটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে এখন আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর কাজ চলছে এবং সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাও সন্তোষজনক পর্যায়ে। যথাযথ পদক্ষেপ নিলে অন্য তিনটির ক্ষেত্রেও ২০২৫ সালের মধ্যে ইতিবাচক কিছু দেখা যাবে।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অর্থ সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার, ব্যাংকিং অ্যালমানাকের বোর্ড অব এডিটরসের সদস্য, অ্যাসোসিয়েশোন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি)- সাবেক চেয়ারম্যান এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন, অ্যালমানাকের এক্সিকিউটিভ এডিটর সৈয়দ জিয়াউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। দেশের ব্যাংকিং সেবা, বৈচিত্র্যের তথ্য-উপাত্ত জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে ব্যাংকিং অ্যালমানাকের প্রয়োজনীয়তা ও তাৎপর্য বিষয়ে বিশেষ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যালমানাকের প্রকল্প পরিচালক আবদার রহমান। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ তথ্য রয়েছে ব্যাংকিং অ্যালমানাকে। এতে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্য রয়েছে। ব্যাংকের সহযোগিতায় শিক্ষাবিষয়ক সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘শিক্ষাবিচিত্রা’র উদ্যোগে ২০১৬ সাল থেকে এটি প্রকাশিত হচ্ছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল, শাখা, পণ্যের তালিকাসহ সবই আছে এ বইয়ে।
এদিকে, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করেন। অনেক সময় না বুঝেই হুজুগে মহা আনন্দে শেয়ার কিনছেন, যার ন্যূনতম কোনো মূল্য নেই। এগুলো কয়েক দিন পরই ওয়েস্ট পেপার হিসেবে ব্যবহার হবে। তিনি বলেন, আমি বিনিয়োগকারীদের দায়ী করছি না। পুঁজিবাজারের প্লেয়ার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার (রেগুলেটর) অনেক দোষ আছে। আমি মনে করি এটা প্রচার করা দরকার। সঠিক তথ্য-উপাত্ত ছাড়া কোনো কিছু মূল্যায়ন হয় না উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, বিগত ১৫ বছরের তথ্য বিভ্রাট নিয়ে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। যেমন পতিত সরকার মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধি নিয়ে তথ্য বিভ্রাট করেছে ইচ্ছাকৃতভাবেই। সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরাকে (বিবিএস) বলা হয়েছে তথ্য যা আছে তাই যেন প্রকাশ হয়। তিনি বলেন, এখানে কারচুপির কোনো ব্যাপার নেই।